নরসিংদীর মেঘনা নদীর চরাঞ্চল নাগরিয়াকান্দী শেখ হাসিনা সেতুর পাশে স্কুলছাত্র ফারহান আহমেদ ওরফে অনিক হত্যার ঘটনায় তার বাবা শহিদুল্লাহ মিয়া বাদি হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এই প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ ৩জনের আটকের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। মামলায় ৭জনের নাম উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৩ আগষ্ট) সদর উপজেলার নাগরিয়াকান্দি এলাকায় শেখ হাসিনা সেতুতে বেড়াতে যায় সাটিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ফারহান আহমেদ ওরফে অনিক। এসময় দড়ি নবীপুর গ্রামের আজিজুল, শ্রাবণ, আরিফ ও মাইন উদ্দিনের সাথে অনিকের কথা কাটাকাটি হয়। পরে আশপাশের লোকজন তাদেরকে কথা কাটাকাটি থামিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
এ ঘটনার একদিন পর আজিজুল, শ্রাবণ, আরিফ ও মাইন উদ্দিন, ইয়াসিন, সাগর বাদশা নৌকাযোগে পিকনিক করতে নাগরিয়াকান্দি এলাকায় শেখ হাসিনা সেতুতে আসে।বিকাল ৪টার দিকে অনিকের বন্ধু আরিফ তাকে মোবাইলে ফোন করে অনিককে ব্রিজে আসতে বলে। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সমাধান করা হবে বলে আশ্বাসও দেয়। অনিক সেখানে যাওয়ার পর আরিফ ও তার বন্ধুরা মিলে তাকে নৌকার কাঠ দিয়ে পেটাতে থাকে।
একপর্যায়ে তার মাথায় সজোরে আঘাত করে এবং পানিতে ফেলে ডুবিয়ে দেয়। পানিতে নিঁখোজ হয়ে গেলে প্রায় ৩০ মিনিট খোজাখোজি করে তাকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ অনিকের লাশ উদ্ধার করে।এদিকে স্কুলছাত্র নিহত হওয়ার ৩দিনপরও সন্তান হারানোর বেদনায় বাকরুদ্ধ নিহতের মা-বাবা ও স্বজনরা।
অনিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের বাবা শহিদুল্লাহ মিয়া। তিনি বলেন, অনিককে তারা পরিকল্পিতভাবে কুকুরের মতো পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে সংজ্ঞাহীন নিহতের মা রোজিনা বেগম ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দাবী করেন।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি বিপ্লব কুমার দত্ত সাংবাদিকদের জানান, এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হলেও তদন্তের স্বর্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (৪ আগষ্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদর উপজেলার নাগরিয়াকান্দি এলাকায় ঈদ উপলক্ষে মেঘনা নদীতে অনিককে পিটিয়ে হত্যা করে বন্ধুরা। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সাধারন জনগনের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল কালাইগোবিন্দপুর গ্রামের শহিদুল্রাহ মিয়ার ছেলে ফারহান আহমেদ ওরফে অনিক। সে নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র। তার বাবা শহিদুল্লাহ পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাটিরপাড়া এরঅকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। সেই সুবাধে অনিক সাটিরপাড়া স্কুলে লেখাপড়া করে।